১৩.৫.১ কম্পিউটার
তোমরা সবাই কম্পিউটার ব্যবহার করেছ। যারা একটু ইতস্তত করছ, তাদেরকে বলা যেতে পারে কম্পিউটার বলতেই যাদের চোখের সামনে একটা মনিটর, একটা সিপিইউ বা কি-বোর্ড কিংবা ল্যাপটপের ছবি ভেসে ওঠে— শুধু সেগুলোই কম্পিউটার নয়। আমরা যে মোবাইল টেলিফোন ব্যবহার করি, তার মাঝেও ছোট ছোট এবং পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার রয়েছে।আধুনিক জগতে কম্পিউটারের গুরুত্বটি বিশাল। তার কারণ এটি অন্য দশটি যন্ত্রের মতো নয়। অন্য যেকোনো যন্ত্র বা টুল (Tool) সব সময়েই একটা নির্দিষ্ট কাজ করতে পারে। একটা স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে বাশি বাজানো সম্ভব নয় আবার বাঁশি দিয়ে স্ক্রু খোলা যায় না। কিন্তু কম্পিউটার এমন একটা যন্ত্ৰ, যেটা দিয়ে সম্ভাব্য সকল কাজ করা যায় এবং কী কী করা যাবে তার সীমারেখা মাত্র একটি এবং সেটি হচ্ছে মানুষের সৃজনশীলতা একজন মানুষ যত সৃজনশীল সে কম্পিউটারের তত বেশি ব্যবহার বের করতে পারবে। তাই কম্পিউটার দিয়ে আমরা যে রকম হিসাব (compute) করতে পারি, ঠিক সে রকম গান শুনতে পারি, ছবি আঁকতে পারি, তথ্য আদান-প্রদান করতে পারি, যন্ত্রপাতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, এমনকি যারা ঘাগু অপরাধী, তারা এটা ব্যবহার করে মানুষকে প্রতারণা পর্যন্ত করে ফেলে।
কম্পিউটারের গঠন: যারা কম্পিউটারের ভেতর উঁকি দিয়েছ, নিঃসন্দেহে তাদের মনে হতে পারে এটি খুবই জটিল একটি যন্ত্র, কিন্তু তোমরা জেনে খুশি হবে, এর কাজ করার মূল বিষয়টি খুবই সহজ। একটা কম্পিউটারের মূল অংশ দুটি: একটি হচ্ছে মাইক্রোপ্রসেসর, অন্যটি হচ্ছে মেমোরি। (চিত্র ১৩.১৩) মেমোরির ভেতর নানা ধরনের নির্দেশ বা ইনস্ট্রাকশন জমা করা থাকে, সেগুলো কিছু ডিজিটাল সিগন্যাল ছাড়া আর কিছুই নয়। মেমোরি থেকে এই ইনস্ট্রাকশনগুলো মাইক্রোপ্রসেসরে পাঠানো হয়, মাইক্রোপ্রসেসর কোন ইনস্ট্রাকশনের জন্য কী করতে হবে, সেটি জানে এবং তার জন্য বরাদ্দকৃত কাজটি শেষ করে এবং যখন প্রয়োজন হয়, তখন ফলাফলটি আবার মেমোরিতে জমা করে দেয়। এভাবে মেমোরিতে রাখা সবগুলো ইনস্ট্রাকশন শেষ করা হলে আমরা বলে থাকি এটা তার প্রোগ্রাম পুরোটা শেষ করেছে। কম্পিউটারের তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য শুধু মেমোরির ওপর নির্ভর করা হয় না, পাকাপাকিভাবে সেখানে তথ্য রাখার ব্যবস্থা করা হয়, সেটাকে আমরা হার্ড ড্রাইভ বলে থাকি।
কম্পিউটারে একটা প্রোগ্রাম চালাতে হলে তার সাথে বাইরে থেকে যোগাযোগ করতে হয়। যেসব যন্ত্রপাতি (কি-বোর্ড কিংবা মাউস) দিয়ে কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করা হয়, তাদেরকে বলা হয় ইনপুট ডিভাইস। কম্পিউটার আবার তার তথ্য ব্যবহারকারীর কাছে দিতে পারে, যেসব যন্ত্রপাতি দিয়ে কম্পিউটার বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগ করে (মনিটর, প্রিন্টার), তাকে বলা হয় আউটপুট ডিভাইস।
তবে আজকাল কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে নেটওয়ার্কিং। প্রত্যেকটা কম্পিউটারেই নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড (NIC: Network Interfacing Card), থাকে যেটি দিয়ে সেটি একটি নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত থাকে এবং কম্পিউটার সেটি দিয়ে তথ্য গ্রহণ করে আবার তথ্যকে প্রেরণ করে।
১৩.৫.২ ইন্টারনেট ও ই-মেইল
ইন্টারনেট
তোমরা এর মাঝে অনেকবার কম্পিউটার কী এবং সেটা কীভাবে কাজ করে, সেটা পড়ে এসেছ। একটা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারগুলোকে সাধারণত একটা নেটওয়ার্ক দিয়ে পরস্পরের সাথে যুক্ত করে দেওয়া হয় যেন একটা কম্পিউটার অন্য একটা কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করতে পারে, আবার প্রয়োজন হলে একটা কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারের Resource ব্যবহার করতে পারে। এই ধরনের নেটওয়ার্ককে LAN (Local Area Network) বলা হয়ে থাকে। আজকাল LAN তৈরি করার জন্য একটা সুইচের সাথে অনেকগুলো কম্পিউটার যুক্ত করে সুইচগুলোকে পরস্পরের সাথে যুক্ত করে দিতে হয়। যখন একটা কম্পিউটারকে অন্য কম্পিউটারের যোগাযোগ করতে হয়, সেটি যদি তার নিজের সুইচের সাথে যুক্ত কম্পিউটারের মাঝে পেয়ে যায় তাহলে তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে। সেখানে না পেলে অন্য সুইচে খোঁজ করতে থাকে ।
একটি প্রতিষ্ঠানের একটি LAN-কে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের অন্য একটি LAN-এর সাথে যুক্ত করার জন্য রাউটার (Router) ব্যবহার করা হয়। (চিত্র ১৩.১৪) বিভিন্ন নেটওয়ার্ক (Network)-এর নিজেদের মাঝে Inter Connection করে Networking-কে Internet বলা হয়। এই মুহূর্তে পৃথিবীর প্রায় নয় বিলিয়ন কম্পিউটার বা অন্য কোনো ডিভাইস ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত আছে এবং সংখ্যাটি প্রতিদিনই বাড়ছে।
কাজেই ইন্টারনেট হচ্ছে নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক, যেখানে প্রাইভেট, পাবলিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা- বাণিজ্য, সরকারি-বেসরকারি স্থানীয় বা বৈশ্বিক সব ধরনের নেটওয়ার্কগুলো জড়িত হয়েছে। এই বিশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য নানা ধরনের ইলেকট্রনিক, ওয়ারলেস এবং ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।ইন্টারনেট ব্যবহার করে এখন নানা ধরনের তথ্য আদান-প্রদান করা যায় এবং নানা ধরণের সেবা দেয়া যায়। উদাহরণ দেওয়ার জন্যে বলা যেতে পারে, ইন্টারনেটে রয়েছে নানা ধরনের ওয়েব সাইট, ইলেকট্রনিক মেইল, টেলিফোন এবং ভিডিও যোগাযোগ, তথ্য আদান-প্রদান, সামাজিক নেটওয়ার্ক, বিনোদন, শিক্ষা এবং গবেষণা টুল এবং নানা ধরনের ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা। সারা পৃথিবীর মানুষ এখন ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে এবং আমাদের জীবনধারার একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এখানে উল্লেখ করা যায়, ইন্টারনেটে পৃথিবীর সকল মানুষেরই যোগাযোগ করার সমান সুযোগ আছে বলে নানা ধরনের প্রচার এবং অপপ্রচারে ব্যবহার এবং অপব্যবহার সুযোগ তৈরি হয়েছে। নানা ধরনের ক্ষতিকর সফটওয়্যার তৈরি করে নেটওয়ার্কের ক্ষতি করা, বিদ্বেষ এবং হিংসা ছড়ানো আপত্তিকর তথ্য উপস্থাপন ছাড়াও অপরাধীরাও তাদের কার্যক্রমে গোপনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে।কিছু নেতিবাচক বিষয় থাকার পরও ইন্টারনেট এই সভ্যতার সবচেয়ে বড় অবদান এবং এই প্রথমবার পৃথিবীর সকল মানুষ সমানভাবে একটি প্রযুক্তিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ভবিষ্যতের পৃথিবীতে এই নেটওয়ার্কের কী প্রভাব পড়বে, তা দেখার জন্য সারা পৃথিবীর মানুষ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে।
ই-মেইল
ইলেকট্রনিক মেইলের সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ই-মেইল এবং ই-মেইল বলতে আমরা বোঝাই কম্পিউটার, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন ইত্যাদি ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে একজন বা অনেকজনের সাথে ডিজিটাল তথ্য বিনিময় করা। ১৯৭১ সালে প্রথম ই-মেইল পাঠানো হয় এবং মাত্র ২৫ বছরের ভেতরে পোস্ট অফিস ব্যবহার করে পাঠানো চিঠি থেকে ই-মেইলের সংখ্যা বেশি হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে ই-মেইলের ব্যবহার ছাড়া আমরা একটি দিনও কল্পনা করতে পারি না।ই-মেইল পাঠানোর জন্য প্রথমেই যিনি পাঠাবেন এবং যিনি পাবেন দুজনেরই ই-মেইলের ঠিকানার দরকার হয়। তোমরা সবই ই-মেইল ঠিকানার সাথে পরিচিত এবং সবাই লক্ষ্য করেছ ই-মেইল ঠিকানাটি @ বর্ণটি দিয়ে ভাগ করা হয়েছে। যদি abc@def.com একটি ই-মেইল ঠিকানা হয়ে থাকে তাহলে @ এর পরের অংশটুকু হচ্ছে ডোমেইন নেইম, যেটা দিয়ে বোঝানো হয় ব্যবহারকারী কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। প্রথম অংশটুকু হচ্ছে ব্যবহারকারীর কোনো ধরনের পরিচয়।
কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট বা অন্য কোনো ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে ই-মেইল পাঠাতে হলে সবসময়েই একটি ই-মেইল সার্ভারের দরকার হয়। এই ই-মেইল সার্ভার ব্যবহারকারীদের ই-মেইল সংরক্ষণ করে এবং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্য ব্যবহারকারীদের সাথে ই-মেইল বিনিময় করে। ই-মেইল বিনিময় করার আরেকটি এবং বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে ইন্টারনেটের দেওয়া ই-মেইল সার্ভিস। তাদের মাঝে রয়েছে Gmail, Yahoo, Hotmail ইত্যাদি ই-মেইলের সেবা শুধু যে বিনামূল্যে দেওয়া হয় তা নয়, ব্যবহারকারীর ই-মেইল সংরক্ষণ করার দারিত্বও গ্রহণ করে থাকে। ই-মেইল পাঠানোর জন্য সবসময় প্রেরণকারী এবং গ্রাহকের ই-মেইল ঠিকানা লিখতে হয়। একটি ই-মেইল একাধিক গ্রাহকের কাছে পাঠানো যায়। প্রয়োজনে ই-মেইলকে অন্য একজনকে “কার্বন কপি” হিসেবে (CC) পাঠানো যায়। ই-মেইলের শুরুতে বিষয় হিসেবে ই-মেইলের বক্তব্যটির একটি শিরোনাম লেখা যায়। শুধু তা-ই নয় ই-মেইলের বিষয়বস্তু লেখার পাশাপাশি তার সাথে অন্য কোনো ডকুমেন্ট, ছবি সংযুক্ত করে পাঠিয়ে দেওয়া যায়। আমরা ই-মেইল ছাড়া এখন একটি মূহূর্তও কল্পনা করতে পারি না। ই-মেইল, ইন্টারনেট কিংবা ইন্টারনেটভিত্তিক নানা ধরনের সামাজিক নেটওয়ার্ক আমাদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। একই সাথে এই প্রযুক্তিগুলোর অপব্যবহার আমাদের জীবনে খুব সহজেই বড় ধরনের বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে। কাজেই এটা বলা বাহুল্য, অত্যন্ত শক্তিশালী এই প্রযুক্তিগুলো আমাদের দায়িত্বশীলের মতো ব্যবহার করতে হবে। উল্লেখ্য, এই বিষয়টি শুধু তথ্যপ্রযুক্তি নয়, সকল প্রযুক্তির জন্য সত্যি।
কাজ: ই-মেইল, ইন্টারনেট কিংবা সামাজিক নেটওয়ার্কে দায়িত্বহীন হিসেবে কী কী ব্যবহার করা সম্ভব তার তালিকা তৈরি কর। |
১৩.৫.৩ কম্পিউটার প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা
তথ্য ও প্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত ব্যাপক ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যারা রোজই মাত্রাতিরিক্ত সময় ধরে কম্পিউটারের কোনো গেইম খেলে, তারা হাতের আঙ্গুলের মাথায় সুই ফুটানোর মতো ব্যথা অনুভব করা এমনকি আঙ্গুলের মাথায় ফোস্কা পড়া, আঙ্গুল ফুলে যাওয়ার মতো স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়ে যাওয়ার উদাহরণও আছে।যারা অধিকক্ষণ ধরে কম্পিউটার নিয়ে কাজ করে, কম্পিউটারের কি-বোর্ড ও মাউসের দীর্ঘক্ষণ ও দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে তাদের হাতের রগ, স্নায়ু, কব্জি, বাহুতে, কাঁধ ও ঘাড়ে অতিরিক্ত টান ( stress) বা চাপ পড়ে। কাজেই কাজের ফাঁকে যথেষ্ট বিশ্রাম না নিলে এসব অঙ্গ ব্যথাসহ নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম না নিয়ে দীর্ঘদিন ও দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারের কাজ করলে চোখে নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হয়, একে বলা হয় কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম। এই সিনড্রেমের মধ্যে রয়েছে চোখ জ্বালাপোড়া করা, চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চোখ চুলকানো, চোখ লাল হয়ে যাওয়া এবং চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়া ।
প্রতিকারের উপায়: কম্পিউটার ব্যবহার থেকে সৃষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসার চাইতে এই সমস্যা সৃষ্টি হতে না দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। আমাদের সতর্ক হতে হবে যেন এসব স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি না হয়। হাত, হাতের কব্জি, আঙ্গুল, কাঁধ ও ঘাড়ের সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যার জন্য যা করতে হবে তা হলো :
১. কম্পিউটারের কাজ করার সময় সঠিকভবে বসতে হবে এবং সোজা সামনে তাকাতে হবে।
২. সঠিক পদ্ধতিতে টাইপ করতে হবে। টাইপ করার সময় হাতে যেন কোনো কিছুর ওপর রাখা না থাকে এবং হাত ও আঙ্গুল যেন সোজা থাকে ।
৩. কাজের ফাঁকে ফাঁকে অন্তত আধা ঘণ্টা পর পর ৫ মিনিটের জন্য হলেও বিশ্রাম নিতে হবে এবং
কাঁধ ও ঘাড়কে রিল্যাক্স করতে দিতে হবে।
কম্পিউার ভিশন সিনড্রোমের কারণে সৃষ্ট চোখের সমস্যা প্রতিরোধ যেসব সতর্কতা অবলম্বন করবে তা হলো:
১. তোমার কম্পিউটারের পর্দাটি যেন অবশ্যই তোমার চোখ থেকে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার দূরে থাকে।
২. কোনো ডকুমেন্ট হোল্ডার ব্যবহার করলে তা অবশ্যই পর্দার কাছাকাছি রাখবে।
৩. মাথার ওপরকার বাতির আলো এবং টেবিলের বাতির আলো এমনভাবে কমিয়ে দিতে হবে তা যেন তোমার চোখে বা কম্পিউটারে পর্দায় না পড়ে।
৪. প্রতি ১০ মিনিট পর পর কিছুক্ষণের জন্য দূরের কোনো কিছুর দিকে তাকাবে, এতে চোখ আরামবোধ করবে।
এই সহজ কিছু নিয়ম মেনে চললেই কম্পিউটার ব্যবহারের কারনে শারীরিক সমস্যাগুলোকে এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে।
মানসিক সমস্যা
কম্পিউটার ব্যবহারে যেসব শারীরিক সমস্যা হতে পারে, তার চাইতে অনেক গুরুতর সমস্যা হচ্ছে মানসিক সমস্যা। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার কারণে আজকাল প্রার সবাই এটি ব্যবহার করতে পারে। ইন্টারনেটে একদিকে যেমন তথ্য ও জ্ঞানের ভাণ্ডার উন্মুক্ত করে রাখা আছে, ঠিক সেরকম সামাজিক নেটওয়ার্ক জাতীয় সার্ভিসের মাধ্যমে অসচেতন ব্যবহারকারীদের মোহগ্রস্ত করে রাখার ব্যবস্থাও করে রাখা আছে। মনোবিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখাতে শুরু করেছেন যে মানুষ যেভাবে মাদকে আসক্ত হয়ে যায়, সেভাবে অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহার, ইন্টারনেট বা সামাজিক নেটওয়ার্কে আসর হয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত কম্পিউটার গেম খেলে মৃত্যুবরণ করেছে এরকম উদাহরণও আছে। কাজেই সবসময়েই মনে রাখতে হবে, আধুনিক প্রযুক্তি মাত্রই ভালো নয়, পৃথিবীতে যেমন অনেক অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকর প্রযুক্তি আছে, ঠিক সেরকম ভালো প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে সেটি আমাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে দেখা দিতে পারে।
অনুসন্ধান (২ পিরিয়ড)
তোমার গবেষণার উদ্দেশ্য হতে পারে: ১. অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যা শনাক্তকরণ। ২. পেশাদার ও অপেশাদার কম্পিউটার ব্যবহাকারীদের স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি না তা জানা। ৩. এসব স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টির কারণ জানা । ৪. ব্যবহারকারীদের বয়স ও ম্যাস্থ্য সমস্যার সাথে কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা জানা। ৫. কী করে এসব স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতিরোধ ও প্রতিকার করা যায় তা জানা।এরপর তোমাকে এলাকা চিহ্নিত করতে হবে এবং তারপর কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের চিহ্নিত করতে হবে। কোনো কোনো সময় একই এলাকায় বেশি কম্পিউটার ব্যবহারকারী না-ও পেতে পার। তখন তোমাকে বিভিন্ন এলাকা থেকে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের খুঁজে বের করতে হবে এবং খুব বেশি ব্যবহারকারী থাকলে তাদের থেকে নমুনা নিতে হবে। এজন্য বন্ধুরা কাজ ভাগাভাগি করে নিতে পার। |
এরপর তোমাকে তোমার অনুসন্ধানের একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। এ প্রতিবেদনে ১. শিরোনাম ২. একটি ভূমিকা ৩. অনুসন্ধানের উদ্দেশ্য ৪. অনুসন্ধানের নমুনা (অঞ্চল বা ব্যক্তি) ৫. অনুসন্ধানের তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতি ৬. অনুসন্ধানের তথ্য বিশ্লেষণ পদ্ধতি ৭. অনুসন্ধানের ফলাফল ও মন্তব্য এবং সুপারিশ |
Read more